আমেরিকা যাওয়ার বন্দোবস্ত চলছিল রায়হানের। মা নিজে উদ্যোগী হয়ে সেখানে বসবাস করা তার এক চাচার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। চাচা পাঠালেন স্পন্সরশিপ। এরপর প্রযোজ্য অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে দূতাবাসে দাঁড়াবার আগেই স্ত্রীর কোল আলো করে এলো সন্তান। ফলে স্ত্রীকে সময় দিয়ে আগামী নভেম্বরে ভিসার জন্য দাঁড়ানোর কথা ছিল তার। তবে ভিসা পাওয়ার আগেই হঠাৎ যেন যমদূত হয়ে সামনে দাঁড়ালেন এসআই আকবর। মারধর খেয়ে তার অকারণে দাবি করা ১০ হাজার টাকা দিয়ে হলেও মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন রায়হান। বাবাকে ফোন করলেন, বাবা টাকা নিয়ে আসতে চাইলেন। কিন্তু, সময় দিলেন না আকবর। বাবা-মা এসে হাসপাতালে পেলেন রায়হানের নিথর দেহ।
সিলেটে পুলিশের নির্যাতনে এভাবে মৃত্যু হওয়া রায়হান উদ্দিনের পরিবারের সব স্বপ্ন এখন ভেঙে চুরমার। মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করে আবারও সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন। দুই মাসের সন্তান কোলে স্ত্রী তান্নির স্বপ্ন ছিল একটা সুখের সংসার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন রায়হান। তাকে হারিয়ে দু’মাস বয়সী মেয়ে আলফাকে নিয়ে বাকরুদ্ধ রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তিন্নি (২২)। রায়হানের বড় বোন রুবা আক্তার থাকেন লন্ডনে। ভাইকে শেষ মুহূর্তে এক পলক না দেখতে পেরে আক্ষেপের শেষ নেই তার। দেশে না এলেও তিনি ভাই হত্যার বিচার চেয়ে লন্ডনে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেনসহ অন্য সহযোগীদের যথাযথ শাস্তি দাবি করছেন তারা।