সুনামগঞ্জের ছাতকে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকি, থানায় অভিযোগ

দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় এক সাংবাদিককে নিজে ও তার বাহিনী দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ২০ শয্যা বিশিষ্ট কৈতক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক চিকিৎক ডা. মোজাহারুল ইসলাম।

 

 

৭ জুন সোমবার রাতে দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ছাতক উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক তমাল পোদ্দার থানায় নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রসঙ্গত, কৈতক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোজাহারুল ইসলাম গত ১০ বছর ধরে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে নানা অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, অফিস সহকারীসহ সবাই কর্মসূচি পালন করে অপসারণ দাবি করেছিলেন। এ বিষয়সহ হাসপাতালকে ঘিরে চিকিৎসকের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা ও দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে এখন হুমকির মুখে আছেন ওই সাংবাদিক।

লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি আবাসিক চিকিৎসক ডা. মোজাহারুল ইসলামের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ প্রচার করেন সাংবাদিক তমাল পোদ্দার। এই সংবাদের জেরে নিজের ফেইসবুক আইডি থেকে ওই চিকিৎসক তমাল পোদ্দারের নাম উল্লেখ করে তাকে হুমকি ধমকি দেন। তার স্ট্যাটাসে কৈতক এলাকার চিকিৎসকের সুবিধভোগী একটি বলয়ও সাংবাদিককে হুমকি ধমকি প্রদান করে সাম্প্রদায়িক উসকানিও দিচ্ছে।

জানা গেছে, মোজাহারুল ইসলাম বিভিন্ন সময় সরকারি চাকরি বিধি লঙ্গন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকার বিতর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন এবং মানুষের চরিত্র হনন করছেন। নারী রোগীদের অনুমতি না নিয়ে ছবি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে তাদের হেয় করছেন। অনেক ধর্মপ্রাণ মহিলা বিভিন্ন সময়ে এসব ঘটনায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ডা. মোজাহারুল ইসলাম টানা দশ বছর ধরে এক হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। এলাকার প্রভাবশালীদের সুবিধা দিয়ে তিনি একটি বলয় তৈরি করে তার বিরোধীদের নিয়মিত সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে হেনস্থা করছেন। হাসপাতালের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহে দুর্নীতিসহ দায়িত্ব পালনকালেই তিনি চেম্বারে বসে রোগী দেখেন।

সম্প্রতি করোনাকালীন সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে তা হাসপাতালের সুবিধাভোগীদের না দিয়ে আত্মসাত করেছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। এন৯৫ মাস্ক হাসপাতালের স্টোরে জমা না দিয়ে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও প্রভাবশালীদের মধ্যে বিতরণ করেছেন।

জানা গেছে তার প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখে ফিস রেখে আবার নাম কুড়াতে হাসপাতালের রেজিস্ট্রারেও রোগীদের নাম লিখে রাখেন। তার প্রাইভেট চেম্বারেই থাকে হাসপাতালের রেজিস্ট্রার। সম্প্রতি তিনি নিজের পকেটের টাকা খরচে করে হাসপাতালের কয়েকজন নার্সের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।

এর আগেও ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি ছাতক থানায় ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন সাংবাদিক ফজলুল হক নোমান। এভাবে তিনি সাংবাদিকসহ তার দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদকারীদের অব্যাহত হুমকি ধমকিসহ সামাজিকভাবেও সুবিধাভোগী বাহিনী দিয়ে হেনস্থা করছেন।

ছাতক থানায় অভিযোগকারী সাংবাদিক তপন পোদ্দার বলেন, ডাক্তার মোজাহারুল ইসলামের হাসপাতাল কেন্দ্রিক দুর্নীতি ও পেশির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি ও তার সুবিধাভোগী গোষ্ঠী আমার নামোল্লেখ করে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। আমি তাদের ভয়ে নিরাপত্তাহীন আছি। তাই সোমবার রাতে ছাতক থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। তিনি বলেন, একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে কিভাবে চাকরি বিধি ভঙ্গ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নামোল্লেখপূর্বক হুমকি ধমকিসহ বিতর্কিত বিষয়ে লেখালেখি করছেন তা বোধগম্য নয়। তার পোষ্য বাহিনী দিয়েও আমাকে হুমকি দেওয়াচ্ছেন।

এ বিষয়ে ডা. মোজাহারুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।

সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. শামসুদ্দিন বলেন, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আছে। দীর্ঘদিন এক স্থানে থাকলে যা হয় এখন তাই হচ্ছে। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও তিনি নাড়াচারা করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও তার বিতর্কিত বিষয়গুলো অবগত করা হচ্ছে।

ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন বলেন, সাংবাদিক তপন পোদ্দারের লিখিত অভিযোগটি পেয়েছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।

কালের কণ্ঠ

সেন্সরশিপের খড়গ

স্বাধীন বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, টিভি নাটক, মঞ্চ নাটকের উপর বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি সেন্সরশিপের তথ্য উপাত্ত দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।

বিস্তারিত

লেখার জন্য কারাবন্দী

ফেসবুকে লেখালেখির জন্য জেলে আছেন প্রচুর মানুষ। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন, আছেন এমন মানুষও। তাদের সম্পর্কে জানুন।
বিস্তারিত

বিচারহীনতার বাংলাদেশ

বিচার হচ্ছে না নিকট অতীতের কয়েকশ চাঞ্চল্যকর মামলার। যেসব মামলার সম্ভাব্য আসামী প্রভাবশালী রাজনীতিক অথবা ব্যবসায়ী অথবা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কেউ।

বিস্তারিত

এখন কী অবস্থায় আছে?

ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ডজনখানেক গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিলো। সেসব গ্রাম, গ্রামের মানুষেরা এখন কেমন আছেন?
বিস্তারিত