ব্লগার রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা

শাহবাগে প্রজন্মের গণজাগরণের অন্যতম ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনকে (৩৫) নৃশংসভাবে হত্যা করেছে আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গিরা । ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে মিরপুরের পলাশনগরের তার বাড়ির সামনে তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

 

রাজীবের বাসা মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের ৫৬ নম্বর পলাশনগর। নিহত রাজীব একজন স্থপতি ও ব্লগার একটিভিস্ট আন্দোলনের সক্রিয়কর্মী এবং ইমরানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি গত ১০ দিন যাবত্ শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনে সার্বিক অংশগ্রহণ এবং শ্লোগান দিয়েছেন। এদিকে রাজিব নিহত হওয়ার খবর শাহবাগ চত্বরে পৌঁছালে তাত্ক্ষণিকভাবে সমবেত আন্দোলনকারীরা এক মিনিট নীরবতা পালন করে এবং ব্লগার খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এদিকে নিহতের স্বজন ও সহকর্মীরা জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেছেন। তারা বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার পিতা ডা. নাজিম উদ্দিন এবং মা নার্গিস গ্রামের বাড়ি থেকে ছুটে এসে ছেলের হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাওয়ায় তাদের ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত হবার খবর জানাজানি হলে সর্বস্তরের মানুষ পলাশনগরের বাসায় ছুটে যায়। ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, রাজীব হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চারটি টিম কাজ করছে। এছাড়া আন্দোলনরত ব্লগারদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

নিহত রাজীবের মামা খুররম হায়দার জানান, রাজীব গতকাল বিকাল তিনটার দিকে শাহবাগ থেকে বাসায় ফেরেন। এসময় তার সঙ্গে তার ল্যাপটপটি ছিল। বাসায় খেতে খেতে ল্যাপটপ থেকে বিভিন্নস্থানে ম্যাসেজও পাঠিয়েছেন। খাওয়া শেষ করে বিকাল ৪টার দিকে রাজীব শাহবাগের উদ্দেশে বেরিয়ে যান। তার বন্ধুদের দেয়া তথ্য মতে রাজীব রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে বাসায় ফেরেন।

তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ঘাতকরা তাকে আগে থেকেই অনুসরণ করে আসছিল। হত্যার ধরন ও লাশ পড়ে থাকা দেখে মনে হচ্ছে বাসায় ঢোকার মুহূর্তেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তার মৃত দেহের পাশেই পড়েছিল ল্যাপটপ ও চশমা। এলাকার লোকজন তাকে জানিয়েছেন, রাত পৌনে নয়টার দিকে কালো মুখোশ পরা দুই যুবককে তারা পালাতে দেখেছেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুররম হায়দার জানতে পারেন তার ভাগ্নেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খবর পেয়ে পল্লবী থানা পুলিশ পৌনে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

এলাকাবাসী জানান, রাজীবের রক্তাক্ত লাশ বাসার সামনে রাস্তায় পড়েছিল কিন্তু প্রথমে উপস্থিত এলাকাবাসী তার লাশ শনাক্ত করতে পারেনি। পরে বাসার কাজের মেয়ে লাশ শনাক্ত করেন। আহমেদ রাজীব হায়দার শোভনের গ্রামের বাড়ি কাপাসিয়া। বাবা ডা. নাজিম উদ্দিন। মা নার্গিস আক্তার কাপাসিয়া থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা। দুই ভাইয়ের মধ্যে রাজীব বড়। ছোট ভাই নোভেলও একজন প্রকৌশলী। রাজীব বিবাহিত। ঘটনার সময় তার স্ত্রী ছিলেন পুরনো ঢাকায় তার বাবার বাসায়। বাবা-মা থাকেন গ্রামের বাড়িতে। নিহত রাজীব হায়দার শোভন ‘থাবা বাবা’ নামে ‘আমার ব্লগ’ ও “নাগরিক ব্লগে” লিখতেন। মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, ঘটনার পর কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের বর্ণনা মতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ধারালো দা উদ্ধার করা হয়েছে। পল্লবী থানার এসআই আনিসুর রহমান জানান, পলাশনগর এলাকায় রক্তমাখা লাশ দেখে স্থানীয় লোকজন রাত সোয়া ১০টার দিকে থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। রাতে ১টায় সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ইত্তেফাকবিডি নিউজ ২৪নিউ ইয়র্ক টাইমসডেইলি স্টার

সেন্সরশিপের খড়গ

স্বাধীন বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, টিভি নাটক, মঞ্চ নাটকের উপর বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি সেন্সরশিপের তথ্য উপাত্ত দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।

বিস্তারিত

লেখার জন্য কারাবন্দী

ফেসবুকে লেখালেখির জন্য জেলে আছেন প্রচুর মানুষ। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন, আছেন এমন মানুষও। তাদের সম্পর্কে জানুন।
বিস্তারিত

বিচারহীনতার বাংলাদেশ

বিচার হচ্ছে না নিকট অতীতের কয়েকশ চাঞ্চল্যকর মামলার। যেসব মামলার সম্ভাব্য আসামী প্রভাবশালী রাজনীতিক অথবা ব্যবসায়ী অথবা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কেউ।

বিস্তারিত

এখন কী অবস্থায় আছে?

ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ডজনখানেক গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিলো। সেসব গ্রাম, গ্রামের মানুষেরা এখন কেমন আছেন?
বিস্তারিত