ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বোরহানউদ্দিনের ভিক্টিম বিপ্লবসহ তিনজন কারাগারে

যার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মোহাম্মদকে নিয়ে কথিত কটূক্তির অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিনে সংঘর্ষ হয়েছে, সেই ভিক্টিম বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভসহ তিন জনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদ আলম তাদের কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।

 

কারাগারে পাঠানো অন্য দুই জন হলেন, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নের মো. ইমন (১৮) ও রাফসান ইসলাম শরীফ ওরফে শাকিল (১৮)। এরমধ্যে শাকিলকে রবিবার পটুয়াখালীর গলচিপা এবং ইমনকে বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া থেকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

অন্য সাত-আট জন অজ্ঞাতনামা আসামির সঙ্গে ‘পরস্পর যোগসাজশে’ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ইসলাম ধর্ম ও মহানবীকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে তা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। রবিবার বোরহানউদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আইটি আইনে মামলাটি দায়ের করেন। বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

আসামিদের মধ্যে বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের খারাকান্দি গ্রামের চন্দ্র মোহনের ছেলে।

ইমনের বাড়ি উপজেলার উদয়পুর এলাকায় এবং শাকিল উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের নুরে আলমের ছেলে। শাকিল পটুয়াখালীর কলাপাড়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্টোরকিপার হিসেবে চাকরি করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর নিজের ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিন থানায় জিডি করেন বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য (২৫) ওরফে শুভ। তার অ্যাকাউন্টের ম্যাসেঞ্জার থেকে ‘মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য’ ছড়িয়ে সেই ‘স্ক্রিনশট’ ব্যবহার করে গত শুক্রবার থেকে বোরহানউদ্দিনে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ করা হয়। পুলিশ বিপ্লবের অ্যাকাউন্ট হ্যাকের প্রমাণ পায় এবং দুই জনকে গ্রেফতার করে। তবে ফেসবুকে কথিত বক্তব্যের জেরে একটি পক্ষ উত্তেজনা ছড়ায়। রবিবার (২০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা সদরের ঈদগাহ মাঠে প্রতিবাদ সভার ঘোষণা দেওয়া হয়। পুলিশ সেখানে সতর্ক অবস্থান নিলেও একটি গ্রুপ ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করে মানুষকে উত্তেজিত করতে থাকে এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। এ ঘটনায় চার জন নিহত হন। আহত হন ১০ পুলিশসহ প্রায় দেড় শতাধিক লোক।
সহিংসতার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সারাদেশে পুলিশকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে বলে পুলিশ সদর দফতর থেকে জানানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ভোলা জেলা প্রশাসক স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মামুদুর রহমানকে প্রধান করে ওই দিনই (রবিবার) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন−অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইটি অ্যান্ড এডুকেশন) আতাহার মিয়া ও ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মহসিন আল ফারুক।

পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। রবিবার (২০ অক্টোবর) রাতে বোরহানউদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবিদ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে ভোলা জেলায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

বাংলা ট্রিবিউন

সেন্সরশিপের খড়গ

স্বাধীন বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, টিভি নাটক, মঞ্চ নাটকের উপর বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি সেন্সরশিপের তথ্য উপাত্ত দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।

বিস্তারিত

লেখার জন্য কারাবন্দী

ফেসবুকে লেখালেখির জন্য জেলে আছেন প্রচুর মানুষ। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন, আছেন এমন মানুষও। তাদের সম্পর্কে জানুন।
বিস্তারিত

বিচারহীনতার বাংলাদেশ

বিচার হচ্ছে না নিকট অতীতের কয়েকশ চাঞ্চল্যকর মামলার। যেসব মামলার সম্ভাব্য আসামী প্রভাবশালী রাজনীতিক অথবা ব্যবসায়ী অথবা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কেউ।

বিস্তারিত

এখন কী অবস্থায় আছে?

ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ডজনখানেক গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিলো। সেসব গ্রাম, গ্রামের মানুষেরা এখন কেমন আছেন?
বিস্তারিত