কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা কারামুক্ত

দীর্ঘ ১১ মাস ৫ দিন পর জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা। বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন। এ সময় স্ত্রী হাসিনা আকতার, বোন ফাতেমা আকতার বেবি, সালমা আকতার, মেয়ে সোমাইয়া মোস্তফা, ছেলে শাহেদ মোস্তফা, সাজেদুল মোস্তফাসহ স্বজনেরা ফরিদকে বরণ করে নেন।

 

ফরিদ মুক্তি পাচ্ছেন, এমন খবরে বিকাল থেকে কারাগারের আশপাশে জড়ো হয় সহকর্মীরা। ফরিদুল মোস্তফার কারামুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপার মোকাম্মেল হোসেন।

এর আগে, দুপুরে টেকনাফ থানায় দায়েরকৃত মামলা নম্বর-এসটি ২৮১/২০২০, জিআর-৫৭৭/২০১৯ শুনানি শেষে পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত ফরিদকে জামিন দেন যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাহমুদুল হাসান। মামলার শুনানিতে অংশ নেন কক্সবাজার জেলা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ছিদ্দিকী, সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল মন্নান ও অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রেজা।

মামলার বাদী ছিলেন টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা আবুুুল কালাম আজাদ।

এছাড়া ঢাকার বাসা থেকে ধরে এনে সাজানো অস্ত্র, বিদেশি মদ ও ইয়াবার মামলা থেকে বুধবার (২৬ আগস্ট) জামিন দেন কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল।

ফরিদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তাকে মিথ্যা মামলায় আসামি বানিয়েছিলেন। প্রদীপের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরেই ফরিদকে এই জেল ও জুলুমের শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।

ফরিদুল মোস্তফা খানের পক্ষে নিযুক্ত প্রধান আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল মন্নান বলেন, জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ফৌজদারি মিস মামলার মূলে জি.আর ১০২৫/২০১৯, (অবৈধ দুটি অস্ত্র ও ৫ রাউন্ড গুলি) এবং জি.আর ১০২৬/২০১৯ (৪ হাজার পিস ইয়াবা) পুলিশের সাজানো মামলা দুটির শুনানি শেষে বুধবার জামিন।

মামলা দুটি ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টের ফরিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়ের করেছিলো পুলিশ। এর আগে, গত ১ মার্চ জি.আর ১০২৭/২০১৯ (বিদেশি মদ উদ্ধার) মামলায় ফরিদকে জামিন দেন একই আদালত।

আইনজীবী আরও জানান, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপের দালাল মৌলভী মুফিজ ও জহিরের গায়েবি চাঁদাবাজির মামলা (টেকনাফ থানা মামলা নং-১১৫/২০১৯, ৩০ জুন ২০১৯) থেকে গত ১৩ আগস্ট জামিন প্রদান করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

এছাড়া ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর টেকনাফ থানায় দায়েরকৃত মামলা নম্বর-৪২/২০১৯ (জি.আর ৭৭৮/২০১৯) থেকে ১৯ আগস্ট জামিন প্রদান করেন টেকনাফের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ। আজকের আদেশের পর ফরিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬টি মামলাতেই জামিন পেলেন তিনি।

২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুরের বাসা থেকে সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ার বাড়িতে তাকে নিয়ে গিয়ে কথিত অভিযান চালানো হয়। ওই সময় গুলিসহ দুটি অস্ত্র, চার হাজার পিস ইয়াবা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার হয় বলে দাবি করে পুলিশ।

গত বছরের ৩০ জুন ফরিদুল মোস্তফা খানের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় চাঁদাবাজি মামলা রুজু হয়। যার মামলা নম্বর-১১৫, জিআর নম্বর-৩১৬/১৯। এরপর পুলিশ তাকে খুঁজতে থাকে। আত্মরক্ষায় ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যায় ফরিদুল মোস্তফা। নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর গত বছরের ২৮ জুলাই পৃথক আবেদনও করেন।

সাংবাদিক ফরিদের পরিবারের দাবি, উক্ত আবেদনের তদন্ত না করে উল্টো টেকনাফ থানা ও কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম মিরপুর থানার পুলিশের সহায়তায় ‘ওয়ারেন্ট’ দেখিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরে আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

বাংলা ট্রিবিউন

সেন্সরশিপের খড়গ

স্বাধীন বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, টিভি নাটক, মঞ্চ নাটকের উপর বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি সেন্সরশিপের তথ্য উপাত্ত দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।

বিস্তারিত

লেখার জন্য কারাবন্দী

ফেসবুকে লেখালেখির জন্য জেলে আছেন প্রচুর মানুষ। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন, আছেন এমন মানুষও। তাদের সম্পর্কে জানুন।
বিস্তারিত

বিচারহীনতার বাংলাদেশ

বিচার হচ্ছে না নিকট অতীতের কয়েকশ চাঞ্চল্যকর মামলার। যেসব মামলার সম্ভাব্য আসামী প্রভাবশালী রাজনীতিক অথবা ব্যবসায়ী অথবা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কেউ।

বিস্তারিত

এখন কী অবস্থায় আছে?

ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ডজনখানেক গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিলো। সেসব গ্রাম, গ্রামের মানুষেরা এখন কেমন আছেন?
বিস্তারিত