ইউএনও’র বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর দৈনিক যুগান্তরের লোহাগাড়া প্রতিনিধি মো. সেলিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় পুলিশের সঙ্গে ইউএনও নিজে উপস্থিত থেকে সেলিমকে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক সেলিমের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের রশিদপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে সেলিমকে পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার করে লোহাগাড়া থানা পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ইউএনও আবু আসলাম জানান, সেলিমকে গ্রেফতারের সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না এবং ওই সময় কোনো ধরনের হুমকি দেয়ার প্রশ্নই আসে না।
সাংবাদিক সেলিমের স্ত্রী মুর্শিদা বেগম বলেন, ‘শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ পুলিশ নিয়ে বাসায় আসেন ইউএনও আবু আসলাম। ওই সময় সেলিম ল্যাপটপে নিউজ লিখছিলেন। সেখানে গিয়েই ইউএনও সেলিমকে গুলি করার হুমকি দেন। এরপর পুলিশ তাকে হাতকড়া লাগিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যায়। কোনো ধরনের কথা বলার সুযোগ দেয়নি। কী অপরাধে তাকে এভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাও জানায়নি তারা।’
মুর্শিদা বেগম আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে বিরোধপূর্ণ একটি পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে যান ইউএনও। সে বিষয়ে যুগান্তরে প্রতিবেদন লিখেছেন সাংবাদিক সেলিম উদ্দিন। এরপর লোহাগাড়ায় গৃহায়ন কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে নিউজ করেছিলেন। তাই ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গ্রেফতার করিয়েছেন।’
লোহাগাড়া থানার ওসি সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘সেলিমের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের একটি মামলায় গ্রেফতারি পারোয়ানা ছিল। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা তাকে আদালতে পাঠিয়েছি।’ গ্রেফতারের সময় ইউএনও’র উপস্থিতির বিষয় নিয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
লোহাগাড়ার ইউএনও আবু আসলাম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘যুগান্তর প্রতিনিধি সেলিমের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। তাকে গ্রেফতারের সময় আমি পুলিশের সঙ্গে ছিলাম না। শুনেছি সাদা পোশাকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। আমি যেহেতু ছিলাম না, তাই তাকে কোনো ধরনের হুমকি দেয়ারও প্রশ্ন আসে না।’
এদিকে সাংবাদিক সেলিমের আইনজীবী কফিল উদ্দিন জানান, আদালত তাকে (সেলিম) জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।